1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন পাওয়ার প্রত্যাশা বাংলাদেশের

  • Update Time : শুক্রবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ২১১ Time View

প্রত্যয় নিউজ ডেস্কঃ করোনাভাইরাসের তিনটি ভ্যাকসিন যেহেতু শিগগিরই বাজারে আসার জন্য প্রস্তুত, এখন জনগণের মনে একটি প্রশ্ন দেখা দিয়েছে যে, সেখান থেকে একটি ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান আসলে কোথায়।

অনেক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রস্তুতকৃত ভ্যাকসিন নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ায় এটি পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য বিষয়গুলো জটিল হয়ে উঠছে।

তারা বলছেন, সংরক্ষণ সংক্রান্ত সমস্যার কারণে ফাইজার-বায়োএনটেক এবং মডার্নার ভ্যাকসিন দুটি দেশের জন্য অনুপযুক্ত। ফলে বাংলাদেশ মূলত সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া’র (এসআইআই) মাধ্যমে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন পাওয়ার প্রত্যাশা করছে।

ফাইজার-বায়োএনটেক এবং মডার্নার মতো অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনটি অতি-ঠান্ডা তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করার প্রয়োজনীয়তা না নেই। এটি উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বিতরণের জন্য সহজ।

তবে বিজ্ঞানীরা পরীক্ষামূলকভাবে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা এবং ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকা-অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ও তাদের তৈরি ভ্যাকসিনের উৎপাদন ত্রুটি থাকার কথা স্বীকার করেছে। যদিও বিশ্বের প্রথম দেশ হিসাবে ফাইজারের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাজ্য।

গত ৫ নভেম্বর অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের তিন কোটি ডোজ পাওয়ার জন্য ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ।

চলমান পরিস্থিতি বিবেচনায় স্থানীয় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাসের অন্য কোনো কার্যকর ভ্যাকসিন পাওয়ার জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের এখন প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাগুলোর প্রতি মনোনিবেশ করা উচিত। যেমন- মাস্ক ব্যবহার শতভাগ নিশ্চিত করা এবং ভাইরাস প্রতিরোধের জন্য জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ম মেনে চলতে উৎসাহিত করা।

ভ্যাকসিন নিয়ে আরও প্রস্তুতি দরকার

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. বে-নজীর আহমেদ বলেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন কেনার জন্য সেরামের সাথে বাংলাদেশ চুক্তি করেছে, তবে এই ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের ফলাফল নিয়ে এখন অনেক প্রশ্ন রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘চীন ও রাশিয়ার তৈরি ভ্যাকসিনগুলোর কার্যকারিতা এবং পরীক্ষার প্রক্রিয়া নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। সুতরাং, বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিন সম্পর্কিত বিষয়গুলো আমাদের মনযোগ সহকারে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।’

‘যদিও যুক্তরাষ্ট্রের দুটি পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন অত্যন্ত কার্যকর মনে হচ্ছে, তবে তাপমাত্রা সংক্রান্ত সমস্যার কারণে সেগুলো বাংলাদেশের জন্য অনুপযুক্ত। তাই শেষ পর্যন্ত অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন অনুমোদন পেতে ব্যর্থ হলে ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভাগ্য ভারসাম্যহীন হয়ে থাকবে,’ বলেন এই বিশেষজ্ঞ।

ডা. বে-নজীর আরও বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিন নিয়ে বাংলাদেশের যথাযথ কিছু প্রস্তুতি নেয়া দরকার।

‘এই ভ্যাকসিন মূল্যায়ন করার জন্য আমাদের একটি ভ্যাকসিন এবং কিছু বৈজ্ঞানিক কমিটি থাকা দরকার, যারা নির্ধারণ করবে কোন ভ্যাকসিন বাংলাদেশের জন্য উপযুক্ত। আমাদের বিদ্যমান কোল্ড চেইনের দিকে নজর দিতে হবে এবং উপযুক্ত কোনো ভ্যাকসিন পাওয়া গেলে তা সংরক্ষণ করার জন্য এই কোল্ড চেইন প্রস্তুত রাখতে হবে,’ বলেন তিনি।

ভ্যাকসিনের অনুমোদন একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সাবেক আঞ্চলিক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মুজাহেরুল হক বলেন, ‘কার্যকর, গুণগতমান সম্পন্ন এবং পুরোপুরি নিরাপদ কোনো ভ্যাকসিন এখনও পাওয়া যায়নি। সম্ভাব্য কিছু ভ্যাকসিন প্রার্থী এখনও ট্রায়ালের পর্যায়ে রয়েছে।’

তিনি জানান, ট্রায়াল শেষ হওয়ার পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি কমিটি খতিয়ে দেখবে যে যথাযথ নির্দেশনা অনুসরণ করে পরিকল্পিতভাবে সেটি পরিচালিত হয়েছে কিনা। এরপর ট্রায়ালের সমস্ত ফলাফল যাচাই করা হবে।

‘ডব্লিউএইচও’র কমিটি সবকিছু ঠিকঠাক পেলে, তারা একটি ভ্যাকসিনের অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করবে। পরে যুক্তরাষ্ট্র, চীন এবং অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) এটি অনুমোদন করবে এবং বিশ্বব্যাপী বিপণনের অনুমতি দেবে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো ভ্যাকসিন অনুমোদনের পর্যায়ে না পৌঁছানোয় এই প্রক্রিয়াগুলো কখন শেষ হবে তা অনিশ্চিত,’ বলেন ডা. মুজাহের।

এই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ডব্লিউএইচও কর্তৃক অনুমোদন না পাওয়া পর্যন্ত কোনো ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারকের সাথে চুক্তি করার বিষয়ে বাংলাদেশের তাড়াহুড়ো করা উচিত হবে না।

জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট আধুনিকীকরণ

জনস্বাস্থ্যবিদ মুজাহেরুল হক বলেন, বাংলাদেশ যেকোনো সফল ভ্যাকসিন তৈরির জন্য প্রস্তুতি নিতে পারে। কোনো দেশ যদি একটি ভ্যাকসিন তৈরি করতে চায়, তবে এর জন্য ভালো উৎপাদন অনুশীলন নিশ্চিত করা এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার শর্ত পূরণ করতে হবে।’

তিনি বলেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন তৈরির জন্য সেরাম যেমন আবেদন করেছিল, ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথ (আইপিএইচ) ডব্লিউএইচএও’র কাছে বাংলাদেশে ভ্যাকসিন তৈরির জন্য একইভাবে আবেদন করতে পারে।

‘ডব্লিউএইচও যদি অনুমতি দেয় তবে আইপিএইচ যেকোনো ভ্যাকসিন প্রার্থীর সাথে দেশেই তাদের ভ্যাকসিন তৈরির জন্য একটি চুক্তি সই করতে পারে,’ বলেন ডা. মুজাহেরুল।

এই বিশেষজ্ঞ বলেন, সরকারের এখন উচিত আইপিএইচের সক্ষমতা বাড়াতে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণ এবং এটির আধুনিকায়ন করা যাতে দেশেই ভ্যাকসিন তৈরি করা যেতে পারে।

ভ্যাকসিনের চাহিদা নির্ধারণ

ডা. মুজাহের বলেন, শুধুমাত্র জরিপের অভাবে বাংলাদেশে প্রাথমিকভাবে কতগুলো ভ্যাকসিন প্রয়োজন তা এখনও অজানা।

‘আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কতটা বাড়ছে তা বোঝার জন্য র‌্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট করা প্রয়োজন। এটি ভ্যাকসিনের প্রয়োজনীয় ডোজ সম্পর্কে ধারণা পেতে এবং ন্যায়সঙ্গতভাবে বিতরণের জন্যে এর অগ্রাধিকার নির্ধারণে সহায়তা করবে,’ বলেন তিনি।

এই বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, যাদের অ্যান্টিবডি অভাব রয়েছে তাদের প্রথমে ভ্যাকসিন দেয়ার ক্ষেত্রে সরকারের উচিত একটি কৌশল গ্রহণ করা।

অধ্যাপক মুজাহেরুল হকের সাথে একমত পোষণ করে ডা. বে-নজীর বলেন, র‌্যাপিড টেস্ট বা একটি জরিপের মাধ্যমে এটি জানা দরকার যে দেশের কতো মানুষের মধ্যে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘যারা ইতোমধ্যে এই ভাইরাসকে পরাজিত করেছেন তাদের ভ্যাকসিন দেয়া হবে কিনা সে বিষয়েও আমাদের সিদ্ধান্ত নেয়া প্রয়োজন।’

‘আমিও কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলাম। তাই প্রাথমিক পর্যায়ে আমি ভ্যাকসিন গ্রহণ করব না। অ্যান্টিবডি থাকায় আমি প্রথমে এর ফলাফল পর্যবেক্ষণ করব। আমার শরীরে ভ্যাকসিন কীভাবে কাজ করবে তা আমি জানি না। সুতরাং, ভ্যাকসিন নেয়ার আগে আমাকে অপেক্ষা করতে এবং পরিস্থিতিটি দেখতে হবে,’ বলেন ডা. বে-নজীর।

বার্ষিক ডোজের প্রয়োজন হতে পারে

বিএসএমএমইউ’র কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের বুঝতে হবে যে ভ্যাকসিন কোনো চিকিৎসা নয়, একটি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা। আমরা এখনও জানিনা ভ্যাকসিন কতক্ষণ কাজ করে বা এই ভাইরাস প্রতিরোধ করতে পারে ‘

তিনি বলেন, বিভিন্ন গবেষণা এবং প্রতিবেদন থেকে জানা যায় যে করোনার ভ্যাকসিন ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো হবে যা প্রতিবছর গ্রহণ করতে হয়।

ভাইরাস প্রতিরোধের জন্য ভ্যাকসিনই সর্বোত্তম উপায় উল্লেখ করে ডা. আতিক বলেন, ‘তবে আমরা ভ্যাকসিনের মাধ্যমে ভাইরাসটিকে সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করতে সক্ষম হব না। ইনফ্লুয়েঞ্জার একটি ভ্যাকসিন রয়েছে, কিন্তু এখনও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে প্রতি বছর এই রোগে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়।

অধ্যাপক ডা. আতিকুর বলেন, কার্যকর ও উপযোগী একটি ভ্যাকসিন পেতে সক্রিয় থাকার পাশাপাশি বাংলাদেশের এখন অন্যান্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার প্রতিও মনোযোগ দেয়া উচিত।

‘আমি মনে করি, ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত করোনার সংক্রমণ রোধে মাস্কের শতভাগ ব্যবহার নিশ্চিত করাই এখন সেরা বিকল্প। সরকারের উচিত, নো মাস্ক নো সার্ভিস- নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা,’ বলেন ডা. আতিক।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..